স্বাস্থ্য ডেস্ক- ২০ মার্চ, ২০২১: গুরুতর অসুস্থ রোগী ও মরদেহ পরিবহনের জন্য সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স সেবা পেতে ব্যাপক ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়।
আবার বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা পেতেও ভোগান্তির শেষ নেই। একদিকে জরুরি মুহূর্তে অ্যাম্বুলেন্স মেলে না, অন্যদিকে রোগীকে আনা-নেওয়া করতে চড়া ভাড়া দিতে হয়। এমনকি অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে একটি গ্রামের বাসিন্দারা নিজেরাই টাকা জমিয়ে কিনেছেন নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা সম্মিলিতভাবে এই উদ্যোগ নিয়েছেন।
দেওপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, এটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত একটি এলাকা। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আক্তার দু’বছর আগে অ্যাম্বুলেন্স কেনার এই উদ্যোগ নেন। শুরুতে তিনি ১০ হাজার টাকা দিয়ে তহবিল চালু করেছিলেন। তারপর পরিষদের সব সদস্য, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গ্রাম পুলিশ এই তহবিলে টাকা দিয়েছেন। পরে গ্রামবাসীদের টাকা দিতে আহ্বান জানানো হয়। মোট ১ হাজার ৪৯৯ জন তহবিলে টাকা দেন। এতে মোট ১৫ লাখ টাকা উঠেছে। এর মধ্যে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স কেনা হয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্স কেনার পর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যারা অ্যাম্বুলেন্স কেনার জন্য টাকা দিয়েছিলেন তাদের প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের একটি করে গোলাপ দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আক্তার বলেন, গ্রামবাসীদের বলেছি, আপনার বাড়ির সামনে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স গেলে আপনি বুক উঁচিয়ে বলতে পারবেন আমার টাকায় কেনা অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে। সবাই স্বপ্রণোদিত হয়ে টাকা দিয়েছেন। সামর্থ্য অনুযায়ী সবাই টাকা দিয়েছেন। একজন সর্বনিন্ম ৪৫ টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন এই তহবিলে। অ্যাম্বুলেন্স কেনার পর বাকি টাকা এখনও তহবিলে আছে। অ্যাম্বুলেন্স কিনতে যাওয়ার জন্য যাতায়াতসহ অন্যান্য খরচ এই তহবিল থেকে করা হয়নি। বাকি টাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান ইউনিয়ন পরিষদের এই চেয়ারম্যান।